ব্লু ইকোনোমিতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা
বিশ্ব অর্থনীতিতে সমুদ্র অর্থনীতি বহুবিধভাবে অবদান রেখে চলেছে। বছরব্যাপী ৩ থেকে ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের কর্মকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে সমুদ্রকে ঘিরে। ইন্দো-প্যসিফিক অঞ্চলে বাংলাদেশের অবস্থান ব্লু-ইকনোমি বা "সুনীল অর্থনীতিতে নিউক্লিয়াসের মতো যার অংশীদারত্ব নিশ্চায়নে বাংলাদেশের অর্থনীতি রকেটগতি পেতে বাধ্য। গতানুগতিক অর্থনৈতিক খাতে ব্যয়-বিনিয়োগ না বাড়িয়ে ব্লু-ইকোনমিতে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে আমাদের ১০ দফা নিম্নরূপ:
১। বঙ্গোপসাগর হতে প্রতি বছর ৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন মাছ ধরা হলেও আমরা মাত্র ০.৭ মিলিয়ন মেট্রিক টন মাছ ধরতে পারি। অবিলম্বে এর পরিমাণ বাড়াতে হবে।
২। প্রতি বছর নূন্যতম ১৫ লাখ মেট্রিক টন লবণ উৎপাদন করার ক্ষমতা আমাদের আছে, এই মর্মে আমাদেরকে অন্তত আশি (৮০%) ভাগ লবন উৎপাদনের ব্যবস্থা নিতে হবে এবং দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করার ব্যবস্থা করতে হবে।
৩। বঙ্গোপসাগরে ভারী খনিজের সন্ধানপ্রাপ্ত ইলমেনাইট, টাইটেনিয়াম, অক্সাইড, রুটাইল, জিরকন, গার্নেট, ম্যাগনেটাইট, মোনাজাইট, কোবাল্ট সহ অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদগুলো অতিসত্বর উত্তোলনের ব্যবস্থা করে রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে হবে।
৪। বিশ্ব বাণিজ্যের ৯০ ভাগই সম্পন্ন হয় সমুদ্রপথে। তাই স্থানীয় জাহাজ তৈরি কোম্পানিগুলোকে সুযোগ-সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে আরো উন্নত জাহাজ তৈরি করে সমুদ্র পরিবহনে কাজে লাগানো ও জাহাজ তৈরি করে রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
৫। গভীর সমুদ্রবন্দর তৈরি করে সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক জাহাজসমূহের ফীডার পরিষেবা দিতে হবে।
৬। সমুদ্রের ওয়েভ বা ঢেউ ও জোয়ার ভাটাকে ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে দেশের বিদ্যুৎখাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার বিষয়ে গবেষণা এবং দক্ষ নিরীক্ষণের লক্ষ্যে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
৭। সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চল কুয়াকাটা, কক্সবাজার, সেন্টমার্টিনে পর্যটন বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে এবং সমুদ্র রক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।
৮। সমুদ্রের সম্পদ আহরণে নির্বিঘ্ন বিচরণ নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে ।
৯। নতুন নতুন সৃষ্টি হওয়া তীরবর্তী ভূখন্ডকে অর্গ্যানিক শস্যাদি উৎপাদনের ব্যবস্থা করে আন্তর্জাতিক অর্গ্যানিক পণ্য রপ্তানী বাজার ধরতে হবে।
১০। কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জ, গ্রিনিং কোস্টাল বেল্ট, সামুদ্রিক মাইনিং ও নিরাপত্তা জোরদারে মহাপরিকল্পনা গ্রহন করতে হবে।