১। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশ এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রে অসংখ্য কর্মকর্তা ও আইনপেশার অনেক আইনজীবী পতিত স্বৈরাচারের আমলে নানাভাবে জুলুমের শিকার হয়েছেন এবং সততা ওস্বাতন্ত্র্যের সাথে দায়িত্ব পালন সত্ত্বেও শুধুমাত্র সন্দেহজনক উপায়ে ও বৈষম্যের শিকার হয়ে অযৌক্তিকভাবে চাকুরি হতে বরখাস্ত, জোরপূর্বক পদত্যাগ ও অযথা হয়রানির শিকার হয়েছেন। এসব মেধাবী চাকুরিচ্যুত কর্মকর্তাদের সামাজিক অপমানের খপ্পর থেকে মুক্ত করে তাদের সম্মান ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে যথাযথ মর্যাদা, পদবি ও অবস্থান ফিরিয়ে দিতে হবে। তাদের যোগ্যতা, বয়োজ্যেষ্ঠতা এবং আদর্শ অবস্থা বিবেচনা করে প্রাপ্য পদে পদোন্নতি দিতে হবে। সসম্মানে চাকুরিতে পুনর্বহালের ক্ষেত্রে কারো ইতোপূর্বে মৃত্যু হয়ে থাকলে পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।
২। আগামীতে সামরিক বাহিনীতে উপযুক্ত ও পর্যাপ্ত প্রমাণ ছাড়াই কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করা, তারুণ্যের প্রারম্ভে বিবাহজনিত কারণ, মাদক-সম্পর্কিত অপরাধ, অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনের মিথ্যা অভিযোগ, বেসামরিক পরিমণ্ডলের যে কোন ব্যক্তির মিথ্যা অভিযোগ, বেআইনি কাজে অসহযোগিতা, পরিবারের রাজনৈতিক পটভূমি ও অনুপযুক্ত আচরণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া ইত্যাদি কারণে কর্মকর্তাদের বহিষ্কার বা বরখাস্ত করা চিরতরে বন্ধ করতে হবে।
৩। রাজনৈতিক এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের খারাপ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে দেশি-বিদেশি সকল গোয়েন্দা সংস্থার হস্তক্ষেপ বা ভূমিকা আইন করে বন্ধ করতে হবে এবং বাংলাদেশ থেকে বিদেশি সকল গোয়েন্দা সংস্থার প্রত্যেকটি এজেন্টকে খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৪। জাতির এই সংকটময় সন্ধিক্ষণে, সশস্ত্র বাহিনীর নৈতিকতা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে এবং দেশ পুনর্গঠনে সরাসরি কাজ করতে সামরিক বাহিনীর অফিসারদেরকে সশস্ত্র বাহিনীতে পুনঃস্থাপন করার মাধ্যমে তাদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সম্মান ও মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হবে।
৫। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পুলিশ, বেসামরিক প্রশাসন বা এখন শূন্য থাকা কোনো দায়িত্বশীল সরকারি পদে যোগ্য কর্মকর্তাদের যথাযথ পদমর্যাদা অনুযায়ী পুনর্বাসন/আত্তীকরণ করতে হবে। সমসাময়িক মানবাধিকারের মানদণ্ডের সাথে সারিবদ্ধ করার জন্য ঔপনিবেশিক যুগের আইন ও প্রবিধানের ম্যানুয়াল পর্যালোচনা এবং আপডেট করতে হবে। নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ ও জুলুমের শিকার হওয়া অফিসারদের প্রতিনিধি দ্বারা কমিশন গঠনের মাধ্যমে এসব অন্যায়ের জন্য দায়ী ব্যক্তিদেরকে দায়বদ্ধ করতে হবে।
৬। এই কর্মকর্তাদের বেশিরভাগই বরখাস্ত বা অকালীন অবসরপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। এসব কর্মকর্তাগণ আর্থিক দিক থেকে চরমভাবে সুবিধাবঞ্চিত হয়েছেন এবং সামাজিকভাবে চরম অবমাননার শিকার হয়েছেন। তাই এসব কর্মকর্তাদেরকে সম্পূর্ণ আর্থিক সুবিধা প্রদান পূর্বক স্বাভাবিক অবসর প্রদান করতে হবে। একইসাথে তাদের সক্ষমতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন সরকারি ও আধা-সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থায় নিয়োগের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
৭। সর্বোপরি এক দেশ-এক সংবিধান কিন্তু দুটি ব্যবস্থা’র বিলোপ সাধন করতে হবে। প্রশাসন, সামরিক বাহিনী ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ঢেলে সাজানোর ব্যাপারে সচেষ্ট হতে হবে।