ভারতের সাথে সম্পর্কের পুনঃবিন্যাস ও সংস্কারের ১২ দফা
ভারত প্রশ্নে আমাদের অবস্থান
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক অত্যন্ত ব্যাপক, বিস্তৃত ও বহুমাত্রিক। অভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদের ভাগাভাগি, গভীরতর বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের তিন ডোমেইনে দেশ দুটির সম্পর্ক সময়োত্তীর্ণ। ভারতের সাথে আমাদের বৈরিতা কাম্য নয় বরং ন্যায্যতার ভিত্তিতে বন্ধুত্বপূর্ণ সমানুপাতিক অবস্থান কাম্য। আমরা রক্তের দাম দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি। কারো দয়ায় বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। কোনো দেশ যদি মনে করে, আমাদের ওপর প্রভুত্ব করবে, তাদের জেনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের মানুষ কোনো দিন প্রভুত্ব স্বীকার করেনি। মোগল আমলে করেনি, ব্রিটিশ আমলে করেনি, পাকিস্তান আমলে করেনি এবং এখনো করবে না। আমরা বিশ্বাস করি, এই দেশকে পরাধীন করার ক্ষমতা কারো নেই।
- সকল ক্ষেত্রে ভারতের তাবেদারি বন্ধ করতে হবে। যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ভারতের তাবেদারি করবে বা করার চেষ্টা করবে তাদের রাষ্ট্রদ্রোহী ঘোষণা দিয়ে তাদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
- সীমান্তে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ সঠিক তথ্য ও সুষ্ঠু বিচার করতঃ জনসম্মুখে বিচার কার্যক্রম ও প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে।
- মেডিক্যাল ভিসার ক্ষেত্রে অন এরাইভাল ভিসা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ই-ভিসা চালু না করলে ভারতে কোন চিকিৎসা না নিয়ে সমখরচে মালয়েশিয়া কিংবা অন্য যে কোন দেশে চিকিৎসা গ্রহণের পদক্ষেপ নিতে হবে।
- আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী সুষম পানিবন্টন চুক্তি করতে হবে এবং এযাবতকাল পর্যন্ত ভারত পরিকল্পিতভাবে সীমান্তের বিভিন্ন বাঁধের পানি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের যে পরিমাণ ক্ষতি সাধিত হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ ভারত থেকে আদায় করতে হবে।
- ভারত থেকে যেকোন সামরিক অস্ত্র ও সরঞ্জাম কেনা চিরতরে আইন করে বন্ধ করতে হবে।
- বাংলাদেশী টিভি চ্যানেলগুলো প্রচারের শর্তে বাংলাদেশে ভারতীয় টিভি চ্যানেল প্রচার করতে দিতে হবে।
- উভয় দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি সমানুপাতিক হারে করতে হবে। ভারত ছাড়া অন্যান্য দেশ থেকে বিকল্প পণ্য আমদানি-রপ্তানি করতে হবে।
- কোন ভারতীয় বাংলাদেশে ওয়ার্ক পারমিট আবেদন করতে পারবেনা। বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থানরত ওয়ার্ক পারমিট ভিসাধারীদের বার্ষিক পারমিট নবায়ন ফি নূন্যতম ১০ লক্ষ টাকা করতে হবে।
- বিগত দিনে ভারতের সাথে সকল চুক্তি প্রকাশ্যে এনে, প্রয়োজনীয় সংশোধনের মাধ্যমে উভয় দেশের সমানুপাতিক হারে সুবিধাভোগ অনুযায়ী চুক্তি নবায়ন করতে হবে।
- বাংলাদেশের ভূখন্ড কোন প্রয়োজনেই ব্যবহার করতে দেয়া হবেনা। একান্ত প্রয়োজনে ১:১ হারে চুক্তি করা যেতে পারে সেক্ষেত্রে নেপাল ও ভুটানের সাথে বাংলাদেশের সংযোগ আছে বিধায় ভারতের ভূমি ব্যবহারের শর্তে আমাদের সমুদ্র বন্দর ব্যবহারের আনুপাতিক চুক্তি করা যেতে পারে।
- কোন রাজনৈতিক দল কিংবা রাজনৈতিক ব্যক্তিকে ভারত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আর্থিক অনুদান কিংবা সুযোগ-সুবিধা দিতে চাইলে ভারতের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের আইন করতে হবে।
- সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে ১৮-২২ বছর বয়সী যুবকেদের “Levee en masse” বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণের আওতাধীন করে যেকোন ভবিষ্যত আগ্রাসন ও আক্রমন আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।